অনলাইনে মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন ফরম পূরণ করে অথবা উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে থেকে নির্দিষ্ট পরম সংগ্রহ করে জমা দিলে মাতৃকালীন ভাতা পাওয়া যায়। কিভাবে অনলাইন আবেদন করলে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়া যায় এবং আবেদন কিভাবে করতে হয় এবং মাতৃকালীন ভাতা কত টাকা ইত্যাদি বিষয়গুলোই আজকে আমরা জানবো।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গ্রামের দরিদ্র গর্ভবতী মায়েদের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা কর্মসূচির অধীনে ভাতা প্রদান করে থাকেন। যেকোনো গর্ভবর্তি মহিলা এই ভাতা পেতে পারেন তবে তার জন্য কিছু শর্ত নিয়ম-কানুন রয়েছে। তবে চলুন জেনে নেই কি কি শর্ত পূরণ করতে হবে এবং কোথায় থেকে ভাতা পাওয়া যাবে এবং কিভাবে অনলাইনে আবেদন করতে হবে ইত্যাদি সকল বিষয়।
মাতৃত্বকালীন ভাতা কিভাবে পাওয়া যায়?
অবশ্যই দরিদ্র গর্ভবতী মাকে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার জন্য ইউনিয়ন পরিষদে যোগাযোগ করতে হবে। মাতৃত্বকালীন ভাতা প্রকল্পে গর্ভবতী মায়ের নাম অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ইউনিয়ন পরিষদের কর্মকর্তাগণ সকল তথ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে যাচাই-বাছাই করে চূড়ান্তভাবে মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য নির্বাচন করবেন
আপনি প্রতিমাসের এক থেকে বিশ তারিখের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ বরাবর আবেদন করতে হবে মাতৃকালীন ভাতার জন্য।
তবে বর্তমানে মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার জন্য অনলাইনের আবেদন করার সিস্টেম চালু হয়েছে তবে এর বিকল্প হচ্ছে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা অফিস থেকে ফরম নিয়ে সেটি পূরণ করে জমা দিতে হবে।
মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার জন্য অনলাইনে এখন সহজেই আবেদন করা যায় সঠিকভাবে যদি আপনি অনলাইন আবেদন করতে পারেন তাহলে কর্তৃপক্ষ আপনার আবেদন চূড়ান্ত ভাবে ঘোষণা করবেন এবং আপনি মাতৃকালীন ভাতার জন্য বিবেচিত হবেন।
মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার জন্য শর্ত সমূহ।
- গর্ভধারণ হতে হবে প্রথমবার অথবা সর্বোচ্চ দ্বিতীয়বার।
- বয়স ২০ বছর হতে হবে।
- মাসিক ইনকাম ১৫০০ টাকার ভিতরে থাকতে হবে
- অন্যের বাড়িতে থাকে বা নিজের বসতবাড়ি আছে।
- পরিবারের কারো কৃষি জমি নেই অথবা মাছ চাষের পুকুর নেই এমন ব্যক্তি।
- আবেদন করার সময় অবশ্যই গর্ভবতী থাকতে হবে।
- যে ব্যক্তি আবেদন করবে তাকে অবশ্যই দরিদ্র হতে হবে।
প্রথমবার এবং দ্বিতীয়বার যে সন্তান গর্ভে থাকবে যদি জন্মের দুই বছর পর ওই সন্তান মারা যায় তাহলে তৃতীয়বার গর্ভধারণের সময় ভাতা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। একজন গর্ভধারিনী জীবনে একবার দুই বছর সময়ের জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবে। দুই সন্তানের ক্ষেত্রে টোটাল তিন বছর এককালীন মাতৃত্বকালীন ভাতা পাবেন
ভাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার জন্য পৌরসভা অথবা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শর্তপূরণ করে ৪০ টাকা ফি প্রদান করে আবেদন করতে পারবেন।
গর্ভবতী ভাতা পাওয়ার নিয়ম
মাতৃত্বকালীন ভাতা বা গর্ভবতী ভাতা পেতে কি কি লাগে
- পাসপোর্ট সাইজ ছবি দুই কপি
- গর্ভকালীন সনদ নাগরিক সনদ।
- সরকারি ভূমিকর্তা কর্তৃক সনদ
- ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন।
- ভোটার আইডি কার্ড।
- স্টিকার কার্ড যদি প্রয়োজন পড়ে।
সবশেষে আপনি বিকাশ নগদ রকেট অথবা ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ভাতৃত্বকালীন ভাতা গ্রহণ করতে পারবেন।
মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম।
অনলাইন আবেদন করার জন্য আপনাকে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট প্রবেশ করুন।
ওয়েবসাইট লিংকঃ http://103.48.16.6:8080/LM-MIS/applicant/onlineRegistration
![]() |
মাতৃত্বকালীন ভাতা অনলাইন আবেদন |
উপরের অনলাইন আবেদন ফরমে এখানে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র নম্বর, জন্মস্থান, ধর্ম, আপনার নাম বাংলাতে ও ইংরেজিতে, পিতার নাম, মাতার নাম, স্বামীর নাম ইত্যাদি সকল তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করুন।
এখানে যদি আপনি অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকেন তাহলে অন্যান্য ভাতা ভোগী এখানে টিক মার্ক দিবেন।
![]() |
মাতৃত্বকালীন ভাতা কিভাবে পাওয়া যায় |
পরবর্তী অপশনে আপনার বর্তমান ঠিকানা: বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড নং, পোস্ট অফিস তারপরে আপনার স্থায়ী ঠিকানা পূরণ করে দিবেন বর্তমান ঠিকানা এবং স্থায়ী ঠিকানায় একই হলে উপরে একই অপশনে টিক মার্ক দিবেন।
![]() |
maternity allowance 2023 |
এরপর আপনার আর্থসামাজিক তথ্য মানে আপনার আর্থিক তথ্য যেমন আপনার প্রথমে রোজগার করেন তিনি কি মহিলা নাকি? এখান থেকে বেছে নিতে পারবেন তারপর মাসিক আয় কোন সমস্যা আছে কিনা জমা জমির পুকুর কৃষি জমি এবং কত নম্বর সন্তান এটা মানে গর্ভধারণক্রম ও সিলেক্ট করে দিবেন কিভাবে আপনি ভাতার টাকা নিতে চান সেটা সিলেক্ট করে দিবেন ব্যাংক এর মাধ্যমে নাকি মোবাইল ব্যাংকিং যেমন বিকাশ, নগদ ও রকেট যেটা দিয়ে নিতে চান সেটা সিলেক্ট করে দিবেন।
![]() |
অনলাইনে গর্ভবতী মায়ের ভাতার কার্ড করার নিয়ম |
পরবর্তী অপশনে আপনাকে আপনার ছবি আপলোড করতে হবে এবং স্বাক্ষর বা টিপসই যেটা ওইটা আপলোড করতে হবে এবং যদি আরো কোন সংযুক্তি থাকে যেমন টিকার কার্ড বা কোন প্রত্যয়ন পত্র বা মেডিকেলের কোন কাগজপত্র সেগুলো সংযুক্ত করে দিবেন।
মাতৃত্বকালীন ভাতা কত টাকা
আবেদনকারী ব্যক্তি যদি মাতৃত্বকালীন ভাতা পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হয় তাহলে আপনি মাসিক ৮০০ টাকা করে পাবেন অর্থাৎ ৬ মাস পর পর ৪৮০০ টাকা পাবেন।
এভাবে দুই বছর মানে ২৪ মাস যদি হয় তাহলে মোট চার বারে ১৯,২০০ টাকা পাবেন। আর যদি সন্তান তিনজন হয় সে ক্ষেত্রে তিন বছরে সর্বমোট ৩৬ মাসে ২৮৮০০ টাকা পাবেন।
মাতৃত্বকালীন ভাতা সম্পর্কে
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এর অধীনে গর্ভবতী মায়েদের সহায়তা এবং দরিদ্র মায়েদের সহায়তা প্রদানের ক্ষেত্রে মাতৃকালীন ভাতা কর্মসূচি চালু করেন বাংলাদেশের প্রতিটি দরিদ্র গর্ভবতী মায়েরা যেন মাতৃকালীন ভাতা পায় এবং তারা যেন তাদের মাতৃকালীন সময় দুঃখ কষ্ট ধৈর্য ধারণ করে থাকতে পারেন। সেজন্য গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার ২০০৫ সালে মা দিবস উপলক্ষে এই উদ্যোগ চালু করেন।
মাতৃকালীন ভাতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে লিংকে ক্লিক করুন।