আপনি যদি ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায় জানেন তাহলে আপনার জন্য ব্যবসা করা সহজ। দেশের বেশিরভাগ মানুষই ব্যবসা করে এবং অধিক লাভের আশায় প্রতিনিয়ত নতুন নতুন ব্যবসা শুরু করে। তাদের মধ্যে কিছু ব্যবসায়ীগণ লাভ করে এবং মাঝে মাঝে কিছু ব্যবসায়ীগণ ক্ষতির সম্মুখিন হয়।
ব্যবসায় সহজেই লাভ করা অনেক কঠিন। তবে আপনি যদি কঠোর পরিশ্রম করতে পারেন এবং ধৈর্য ধরে ব্যবসায় টিকে থাকতে পারেন তাহলে অবশ্যই লাভবান হতে পারবেন। কিছুদিন পর পর নতুন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দেখা যায়। আবার এদের মধ্যে কিছু কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। কারন কিছু নতুন ব্যবসায়ী বা নতুন ব্যবসা বুঝে উঠতে না পেরে প্রচুর পরিমানে ক্ষতির সম্মুখিন হয়ে পরে বাধ্য হয়ে ব্যবসা বন্ধ করতে হয়।
ব্যবসায় লাভবান ও সফল হতে হলে কঠিন পরিশ্রম, ধৈর্য ও সময় দিয়ে লেগে থাকলে তবেই ব্যবসায় লাভবান হওয়া যায়। তবে তার জন্য অবশ্যই সঠিক জায়গায় সঠিক পন্যের সুষ্ঠ পরিকল্পনা অনুসারে কাজ করতে হবে।
আপনি কি নতুন ব্যবসায়ী। বা ব্যবসা শুরু করার কথা ভাবছেন? ব্যবসা করে সফল হতে চান, আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, ব্যবসায় লাভ করা একটু কঠিন। তবে কিভাবে ব্যবসায় সফল হওয়া যাবে কিভাবে কি শুরু করতে হবে। কি করা যাবে আর কি করা যাবে না ইত্যাদি বিষয়েই আজকের আর্টিকেলে জেনে নিবো।
ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায়
ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনাকে বুঝতে হবে যে কোন জায়গায় কি ধরনের ব্যবসা কিভাবে করলে সফল হওয়া যাবে এবং কোন কোন কাজ করলে ব্যবসায় লাভ করা যাবে আর কোন কোন কাজ করলে ব্যবসার ক্ষতি হবে ইত্যাদি বিষয়।
![]() |
| ব্যবসায় সফল হওয়ার উপায় |
১. পর্যাপ্ত সময় দেওয়া
আপনি যদি নতুন ব্যবসা শুরু করেন বা ইতিমধ্যে ব্যবসা করতেছেন এমন হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ব্যবসায় পর্যাপ্ত সময় দেওয়া উচিৎ। অনেকেই ব্যবসা শুরু করার পর নিজে পর্যাপ্ত সময় দেয় না। ব্যবসাকে অন্যের উপর ছেড়ে দেয় এবং বেশি লাভের আশা করে। কিন্তু বেশিরভাগ এই ক্ষেত্রে লাভের মুখ দেখতে পারে না কারন অন্যের উপর ভরসা করে সহজে লাভ করা যায় না। নিজের কাজ নিজের করা উচিৎ কারন আপনি আপনার ব্যবসাকে যেই চোখে দেখবেন আপনার কর্মচারী সেই চোখে দেখবে না। তাই ব্যবসায় সফল হতে হলে আপনাকে প্রচুর সময় দিতে হবে।
আপনি ব্যবসা করবেন লাভ করা আশায়। আর যদি তাই হয় আর যদি আপনি ব্যবসায় সময় না দেন তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন না যে কি করতে হবে আর কি করা যাবে না। বিখ্যাত সফল উদ্যোক্তাদের ৫ টি বৈশিষ্ট্যের অন্যতম বৈশিষ্ট্য এটি।
২. সময়ের সঠিক ব্যবহার
লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে নির্ধারণ করতে হবে যে আপনি আসলে কি করতে চাচ্ছেন। কোন কাজটি আগে করতে হবে কোনটা পরে করতে হবে সেটা বুঝতে হবে। সময় নিয়ে কাজ করতে হবে। যে, এই কাজটি আমি ৩ দিনের ভিতরে শেষ করবো। এই তিন দিনের ভিতরে অন্য কাজ হাতে নেওয়া যাবে না। তবে নোট করে রাখতে পারেন। অন্যথায় এর উল্টো হয়ে যেতে পারে। একটা কাজ শেষ করে অন্য কাজ শুরু করার আগে কিছু সময় বিরতি নেওয়া ভালো এই সময়ে পূর্বের কাজের একটা সার সংক্ষেপ টেনে নিতে পারেন। নিজেকে গুছিয়ে রাখবেন। অপ্রয়োজনীয় কাজ করবেন না। পরিকল্পনা করে এগিয়ে যান।
৩. ব্যবসায় ঝুঁকি নিন
ব্যবসায় লাভ করতে চাইলে ঝুঁকি নিতেই হবে। ব্যবসায় লাভ করা কঠিন তাই ঝুকি নিতে হবে। যে কোনো সময় যে কোনো সমস্যা মোকাবেলা করার মনমানসিকতা থাকতে হবে। অনেক সময় ব্যবসায় লাভ করার জন্য বেশি বিনিয়োগ এর প্রয়োজন হতে পারে। তখন ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হবে তবেই ব্যবসায় সফল হওয়ার আশা করা যায়।
৪. গ্রাহকের খুশি/ সুবিধা অসুবিধা বিবেচনা করা
ব্যবসা যেহেতু কাস্টমার/গ্রাহকের সাথে জরিত তাই গ্রাহকের তাদের সুবিধা অসুবিধা অনুযায়ী তাদের খুশি করতে পারলেই আপনি ব্যবসায় লাভ করতে পারবেন। এতে করে গ্রাহক আপনার ব্যবসা সম্পর্কে অন্যদের কাছে বলাবলি করবে। তাই সবসময় কাস্টমারের সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করুন। গ্রাহক আপনার পন্য কিনে সন্তুষ্ট হলে তারা মুখে মুখে প্রচার করবে। রিটার্ণ কাস্টমার পেয়ে যাবেন। যারা আপনার দোকানে বারবার আসবে। আপনার জনপ্রিয়তা বাড়বে। মার্কেটে টিকে থাকতে সুবিধা হবে।
৫. ধারাবাহিকতা বজায় রাখুন
ব্যবসায় সফল হতে হলে ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে। প্রত্যেক দিনের কাজ প্রত্যেক দিন শেষ করা ধারাবাহিক ভাবে কাজ করা, কোনো কাজ ফেলে না রাখা, এভাবে কাজ করলে সহজেই ব্যবসায় লাভবান হওয়া যাবে।
৬. ব্যবসার ধরন না পাল্টানো
৭. আয় ব্যায়ের হিসাব রাখা
ব্যবসায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন লেনদেন হয়। নগদ ও বাকি মিলিয়েই ব্যবসা। তাই এর হিসাব রাখাও খুব জরুরী। প্রতিদিনের হিসাব প্রতিদিন লিখে রাখবেন। ঢালী খাতার পাশাপাশি কম্পিউটার বা মোবাইল অ্যাপ এর মাধ্যমেও সহজে হিসাব রাখা যায়। প্রতিদিন ও প্রতি মাসের হিসাবের রেকর্ড লিখে রাখলে ব্যবসায় আয় পাওয়া যায়। অন্যথায় আপনি সবকিছু গুলিয়ে ফেলবেন। হিসাবের গরমিল হলে আর দিশা খুজে পাবেন না। তাই নিয়মিত ব্যবসার হিসাব লিখে রাখা উত্তম। বিশেষ করে কেউ বাকি নিলে সেটা গ্রাককের নাম ও মোবাইল নম্বর সহ লিখে রাখা। নয়তো পরবর্তী সময় ভূলে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
৮. ধৈর্য ধরতে হবে
রাতারাতি ব্যবসায় সফল হওয়া যায় না। শুধু ব্যবসা কেন কোনো সেক্টর এই দিনরাতের ব্যবধানে সফলতার মুখ দেখতে পারবেন না। তাই ধৈর্য ধরতে হবে। ধৈর্য ধরলে আপনার প্রতিটি সিদ্ধান্ত সুন্দরভাবে নিতে পারবেন। হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরে কাজ করে যেতে হবে। তবেই আপনি ব্যবসায় সফলতার মুখ দেখতে পারবেন। আর যদি অধৈর্য হয়ে যান তাহলে ভূল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলতে পারেন
৯. সততা বজায় রাখা
কথায় আছে সততাই ব্যবসার মূলধন, তাই ব্যবসায় ওজনে কম দেওয়া, নষ্ট ও খারাপ পন্য বিক্রি করা, পুরনো মালামাল নতুন বলে চালিয়ে দেওয়া অর্থাৎ মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ব্যবসা করা ইত্যাদি কাজ করলে ব্যবসায় লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি তাই ব্যবসায় অবশ্যই সততা ধরে রাখবেন তাহলেই ব্যবসায় লাভবান হতে পারবেন।
১০. কৌশল অবলম্বন করা
শেষ কথা
ব্যবসায় সফলতা সবার ভাগ্যে জুটে না। সবার কপাল তো এক নয়। আপনার ব্যবসায় কখন কি ঘটে যায় বলা মুশকিল। ব্যবসা করতে গেলে সবসময় লাভ ক্ষতির কথা চিন্তা করতে হবে। ব্যবসা মানেই লাভ ক্ষতির অংক। আর যেহেতু ব্যবসায় লাভ ক্ষতি আছে তাই ব্যবসায় ক্ষতি হয়ে গেলে ভেঙ্গে পরা যাবে না ধৈর্য ধরে এগিয়ে যেতে হবে। ধৈর্য, পরিশ্রম ও সততার সহিত ব্যবসা পরিচালনা করে গেলে একদিন ঠিকই সফলতার মুখ দেখতে পারবেন।
